বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে রাজাকার পরিবারের সদস্য বলে আখ্যায়িত করেছেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে একরামুল করিম তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে এ ব্যাপারে আরও কথা বলার হুমকি দেন। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ২৭ সেকেন্ড এর ওই ভিডিও ক্লিপে তিনি বলেন, আমি তো মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে কথা বলবো না, আমি কথা বলবো ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। একটা রাজাকার ফ্যামিলির লোক এই পর্যায়ে আসেন। তার ভাইকে শাসন করতে পারেন না। এগুলো নিয়ে আমি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কথা বলবো। যদি আমার জেলা কমিটি না আসে, তবে এটা নিয়ে কথা বলা শুরু করবো।
এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার ফেসবুক থেকে লাইভ ভিডিওটি সরিয়ে নিলেও একটি ডাউনলোড কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। এর মধ্যেই একরামুল করিম চৌধুরীর এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের পোস্ট।
ভিডিওর বিষয়ে একরামুল করিম চৌধুরী (এমপি) গণমাধ্যমকে বলেন, ভিডিও সরিয়ে নিলেও তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পরিবারের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য এবং তুমি সত্য কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এই বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা খবর নিলে জানতে পারবেন তার পরিবারে কারা রাজাকার ছিলেন। ওবায়দুল কাদের একজন মুক্তিযোদ্ধা। দীর্ঘদিন থেকে তার ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে এলোমেলো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি তার ভাইকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, এ জন্য কাদের মির্জা এসব কথা বলতে পরছেন।
এদিকে, শুক্রবার দুপুর ২টায় পুনরায় একরামুল করিম ফেসবুক লাইভে আসেন এবং একটি লেখা পোস্ট করেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘মিডিয়ায় কেউ বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। ওবায়দুল কাদের সাহেব নন, শুধু মির্জাকে বুঝিয়ে আমি গত রাতে ফেসবুকে পোস্ট করছি। তিনি আমার গালে জুতা মারার মিছিল করলেন। আমি ১৮ বছর ধরে নোয়াখালী আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে যাচ্ছি দলীয় প্রধান ও ওবায়দুল কাদেরের দিকনির্দেশনায়। আমি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মির্জা আমার বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করায় আমি জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠন এর নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি, মির্জার বিরুদ্ধে রাজপথে আর কোনও বিক্ষোভ প্রতিবাদ করার দরকার নেই। সে এমন কোনও ফ্যাক্ট না যে তার বিরুদ্ধে ফাইটে নামতে হবে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনের সুনাম ধরে রাখতে হবে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কাদের, তার প্রতি আমি এবং আমাদের শ্রদ্ধা আজীবন হৃদয় থেকে থাকবে। নোয়াখালী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে ভালোবাসেন। সুতরাং কোনও ঠেলাঠেলি নয়, সংগঠনকে গতিশীল করতে কাজ করুন সবাই।
একরামুল করিম চৌধুরীর এ ঘটনার প্রতিবাদে আব্দুল কাদের মির্জা শুক্রবার দুপুরে বসুরহাট পৌরসভার রুপালি চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এলাকাবাসী সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বলেও জানা গিয়েছে।
Leave a Reply